ডেস্ক রিপোর্ট: স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারো সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মেলার আয়োজকরা জানিয়েছেন, আগামীকাল মঙ্গলবার আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মেলার উৎসব শুরু হয়ে যাবে। দিনব্যাপী আয়োজিত এই মেলায় দইয়ের পাশাপাশি ঝুরি, মুড়ি, মুড়কি, চিড়া, বাতাসা, কদমা, গুড়সহ রসনা বিলাসী খাবার বিকিকিনি হবে। দই মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যে এলাকায় উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে।
তাড়াশের দই মেলা নিয়ে নানা গল্প-কাহিনী প্রচলিত। তাড়াশ উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি তপন কুমার গোস্বামী জানান, জমিদারী আমলে তাড়াশের তৎকালীন জমিদার পরম বৈঞ্চব বনোয়ারী লাল রায় বাহাদুর প্রথম দই মেলার প্রচলন করেন।
এলাকায় জনশ্রুতি আছে, জমিদার রাজা রায় বাহাদুর নিজেও দই ও মিষ্টান্ন পছন্দ করতেন। তাই জমিদার বাড়িতে আসা অতিথিদের আপ্যায়নে এ অঞ্চলে ঘোষদের তৈরি দই পরিবেশন করতেন। আর সে থেকেই জমিদার বাড়ির সামনে রশিক রায় মন্দিরের মাঠে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে তিনি তিন দিনব্যাপী দই মেলার প্রচলন করেন।
দই মেলায় আসা এ অঞ্চলের দইয়ের স্বাদের কারণে নামেরও ভিন্নতা রয়েছে। যেমন- ক্ষীরসা দই, শাহী দই, শেরপুরের দই, বগুড়ার দই, টক দই, শ্রীপুরী দই- এ রকম হরেক নামে বিক্রি হয় দই। বিশেষ করে বগুড়ার শেরপুর, রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা, গুরুদাসপুরের শ্রীপুর, উল্লাপাড়ার ধরইলের দই, চাটমোহরের হান্ডিয়ালের দই, তাড়াশের দই প্রচুর বেচাকেনা হয়।
নিরেন ঘোষ, সুবাস ঘোষ, মহাদেব ঘোষসহ একাধিক দই প্রস্তুতকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে দুধের দাম, জ্বালানি, শ্রমিক খরচ, দই পাত্রের মূল্য বৃদ্ধির কারণে দইয়ের দামও বেড়েছে। তবে মেলা একদিনব্যাপী হলেও চাহিদা থাকার কারণে কোনো ঘোষের দই অবিক্রিত থাকে না।