আর ২ ফুট পানি বাড়লেই ছাড়া হবে কাপ্তাই হ্রদের গেট


দৈনিক সিরাজগঞ্জ ডেস্ক প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩, ৪:২০ অপরাহ্ন /
আর ২ ফুট পানি বাড়লেই ছাড়া হবে কাপ্তাই হ্রদের গেট

বর্ষা মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও সারাদেশের মতো পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে এখনো মাঝেমধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদ এখন পানিতে পরিপূর্ণ। হ্রদ পানিতে টুইটুম্বর হওয়ার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং উপজেলাগুলোর সঙ্গে নৌ-যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু হ্রদের পানি কাপ্তাই বাঁধের ধারণক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায়, পানি ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রুলকার্ভ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে ১০৭.১৬ ফুট এমএসএল (মীনস সী লেভেল) পানি রয়েছে। যদিও এই সময়ে পানি থাকার কথা ছিল ১০১.৭৬ ফুট এমএসএল (মীনস সী লেভেল)। অর্থাৎ স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৫.৪ ফুট পানি বেশি রয়েছে কাপ্তাই হ্রদে। কাপ্তাই বাঁধের পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার আর ২ ফুট নিচে রয়েছে পানির স্তর। পানি বাড়তে থাকলে বাঁধের নিরাপত্তার স্বার্থে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র।

এই বিষয়ে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আবদুজ্জাহের ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার ২ ফুট নিচে রয়েছে পানির লেভেল। তাই এখন পানি ছেড়ে দেয়ার কথা ভাবছি না আমরা। যদি হ্রদের পানি আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন আমরা স্লুইস গেট ও আন্ডার ওয়াটার টানেলের মাধ্যমে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেব। হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমাদের সবকয়টি ইউনিট চালু রয়েছে। সব ইউনিট থেকে ২০০-২১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ১নং ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট, ২ নং ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট, ৩ নং ইউনিট থেকে ৩৫ মেগাওয়াট, ৪ নং ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট এবং ৫ নং ইউনিট থেকে ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, মাটি ভরাটের মাধ্যমে এই বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। বাঁধটির দৈর্ঘ্য ৬৭০ মিটার (২,২০০ ফুট) ও প্রস্থ ৪৫.৭ মিটার (১৫০ ফুট)। এর ভিত্তিস্তর এবং উপরিতলের প্রশস্ততা যথাক্রমে ৪৫৭ মিটার এবং ৭.৬ মিটার। বাঁধটি সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা থেকে ৩৬ মিটার উপরে অবস্থিত। পানি নির্গমনের জন্য বাঁধের বামদিকে ২২৭ মিটার দীর্ঘ আলাদা নির্গমণপথ রয়েছে, যা দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ১৬,০০০ ঘন মিটার পানি নির্গত হতে পারে। নির্গমণপথে ১৬টি পরপর আলাদা দরজা যুক্ত রয়েছে, যেগুলোকে স্লুইস গেট বলা হয়।