অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা


দৈনিক সিরাজগঞ্জ ডেস্ক প্রকাশের সময় : মার্চ ২৩, ২০২৩, ১০:১৭ অপরাহ্ন /
অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করলে কঠোর ব্যবস্থা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, আমাদের কিছু অতি মুনাফালোভী ব্যক্তিরা রমজানে মানুষকে কষ্ট দেয় ও ভেজাল দিতে চায়। এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে। যেখানে অন্যায় হবে, যেখানে খারাপ খাবার সরবরাহ করা হবে, মানসম্মত পণ্যের পরিবর্তে ভেজাল দেওয়া হবে, যেখানে অতিরিক্ত দাম নেওয়া হবে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর চত্বরে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। রমজানের প্রথম দিন থেকে আগামী ২৮ রমজান পর্যন্ত সুলভমূল্যে এসব পণ্য ভ্রাম্যমাণভাবে বিক্রি করা হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, মানুষ যেন তার সাধ্যের মধ্যে দুধ, ডিম ও মাংস কিনতে পারেন সেজন্য সরকার ভ্রাম্যমাণভাবে এগুলোর বিক্রি কার্যক্রম চালু করেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় করোনায় সর্বপ্রথম ভ্রাম্যমাণভাবে বিক্রি ব্যবস্থা চালু করে খামারি ও ভোক্তাদের উপকার করেছে, অর্থনীতি সচল রেখেছে, যারা বিপণের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত তাদের সহায়তা করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় রমজানে ভ্রাম্যমাণভাবে পণ্য বিক্রির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিপণন কার্যক্রমের মন্ত্রণালয় নয়। এই মন্ত্রণালয় উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সহায়তাকারী। দাপ্তরিক ম্যান্ডেট না হলেও আমরা মানুষের উপকারের জন্য এ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকার ২০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণভাবে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রমজানে সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম পর্যায়ক্রমে কমে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বছর প্রাথমিকভাবে গরুর মাংস প্রতি কেজি ৬৪০ টাকা, খাসির মাংস প্রতি কেজি ৯৪০ টাকা, ড্রেসড ব্রয়লার প্রতি কেজি ৩৪০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও প্রতিটি ডিম ১০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হবে। তবে আমরা যে দাম ধার্য করেছি এটা নির্ধারিত নয়। প্রাথমিকভাবে উৎপাদকদের সঙ্গে বসে ডিমের দাম নির্ধারণে আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রমজানে পর্যায়ক্রমে তা আরও কমে আসবে বলে আশা করছি। একইভাবে মাংস ও অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম আরও কমে আসবে বলে আশা করছি। প্রতিদিনের অবস্থান অনুযায়ী এটি পরিবর্তিত হবে। তবে কোনোভাবেই প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত মূল্যের ওপরে উঠবে না। আমরা চেষ্টা করব এ মূল্যের নিচে রেখে কীভাবে মানুষকে সাহায্য করা যায়।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা করে এবার দুধের আধা লিটারের ছোট প্যাকেট, অল্প পরিমাণ ডিম এবং আধা কেজির মাংসের প্যাকেট বিক্রি করা হবে। যাতে একেবারে নিম্নআয়ের মানুষও সাধ্যের মধ্যে এসব পণ্য কিনতে পারেন। এর মাধ্যমে তুলনামূলকভাবে স্বল্প আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চায় শেখ হাসিনা সরকার।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদক ও বিপণনকারীদের মাঝখানে একটি মধ্যস্বত্বভোগী মহল কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রশাসন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। উৎপাদনের সঙ্গে যুক্তিসঙ্গত লাভের বাইরে যারা অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছে, অতিরিক্ত মুনাফার জন্য মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট ও ভোক্তা অধিকার কর্তৃপক্ষসহ সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। আশা করি মানুষের সহনশীল মূল্যে এসব পণ্য বিপণনে আমরা সহযোগিতা করতে পারব।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, যারা অতিরিক্ত লাভ করতে চায়, তারা অতিরিক্ত মূল্য নেয়। দুধ, ডিম ও মাংসের ভ্রাম্যমাণ বিপণনে সরকার কোনো লাভ করছে না, কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। কোনো ভর্তুকি না দিয়ে রমজানে যে দামে সরকার বিক্রি করতে পারছে, সে দামে বিক্রি করার মতো ব্যবসায়ীদেরও যৌক্তিক অবস্থা রয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ।