লন্ডন প্রবাসী মো. ইউসুফ হোসেনের চাঁদপুরে গ্রামের বাড়ীতে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। প্রথমে তারা বাড়িঘর ভাংচুর করে, বাড়িতে অবস্থানরত লোকদের বেধড়ক পিটিয়ে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ইউসুফ হোসেনের বাবা-মা মারাত্মক ভাবে আহত হন।
মো.ইউসুফ হোসেন ফরিদগঞ্জ থানার চরমান্দারী গ্রামের মো. নুরুল আমিন ও মোবেস্বেরা বেগমের একমাত্র ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মো. ইউসুফ হোসেন দীর্ঘদিন সরকারের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন লেখালেখি করে থাকেন। তিনি দেশে অবস্থান কালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এবং সরকার ও সরকার দলের নেতা কর্মিদের সমাজবিরোধি কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতেন। এরপর তিনি পালিয়ে লন্ডনে চলে যান এবং সেখান থেকেও সরকার বিরোধি নানাবিদ কার্যকালাপে লিপ্ত আছেন। এতে বাংলাদেশে ইউসুফের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজন নিরাপত্তাহীনতায় অনিশ্চিত জীবন যাপন করছে। তিনি অনেক দিন ধরে স্যোসাল মিডিয়াতে সরকার বিরোধি বিভিন্ন লেখালেখি করে আসছেন এবং গত কয়েকদিন আগে তার একটা ফেসবুক পোস্টে সরকার প্রধানের বিপক্ষে বিরুপ মন্তব্য করলে তার বিরুদ্ধে এলাকার আওয়ামীপন্থি লোকেরা ফুঁসে ওঠে। তারই রেশ ধরেই এ হামলা হয়েছে এমনটাই মনে করেছেন এলাকাবাসী।
ইউসুফের গ্রামের এক প্রতিবেশি জব্বার মিয়া জানান, বেশ কয়েক মাস আগেও তার বাবার উপর কে বা কারা হামলা করে এবং তাকে মূমুর্ষ অবস্থা স্থানীয় বাজারের পাশে রেখে চলে যায়।
গত ২৩ মার্চ বিকাল ৪ টার দিকে কিছু সন্ত্রাসী ইউসুফের বাড়িতে হামলা করেন। তখন তার বাবা-মা বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। দুর্বৃত্তরা তার বাবা-মাকে মারধর করে এবং ঘরের আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়। দুর্বৃত্তরা চলে যাবার আগে তার বাবা-মাকে এই বলে হুমকি দেয়, যে আগামি এক মাসের মধ্যে ইউসুফকে দেশে ফিরিয়ে না আনলে তাদের কে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে। পরে এলাকাবাসী জড়ো হলে দুর্বৃত্তরা প্রস্থান করে। এলাকাবাসি দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ইউসুফের বাবা ও মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এলাকার মুদি দোকানদার মাসুদ রানা বলেন, কে বা কারা হামলা করেছে তা জানি না। তবে চিৎকার শুনে আমরা এগিয়ে গিয়ে দেখি একদল সশস্র লোক ইউসুফের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করছে এবং আমাদের উপস্থিতিতে তারা শটকে পড়ে। পরে আমরা আগুন নিভিয়েছি এবং আহত নুরুল আমিন ও মোবেস্বেরা বেগমকে হাসপিটালে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করি।
জানা যায়, জনাব ইউসুফ এলাকার নানান ধরনের উন্নয়নমূলক ও সামাজিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িতছিলেন। এলাকার সাধারণ মানুষজন তাকে পছন্দ করেন। এতেও সরকারি দলের প্রভাবশালী নেতাকর্মিরা ঈর্ষান্বিত হয়। এতে তারা ইউসুফ ও তার পরিবারের উপর বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে আসছে। নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে একজন এলাকাবাসি জানান যে ২০০৮ সালে সাদা পোষাকে একদল মানুষ তাকে উঠিয়ে নেয় এবং আহত অবস্থায় রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়। তারপর দেশ থেকে পালিয়ে লন্ডনে চলে যান ইউসুফ।
আমাদের প্রতিনিধী ফরিদগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করলে কর্তব্যরত পুলিশ পরিদর্শক এব্যপারে কিছু জানেন না বলে জানান।
আপনার মতামত লিখুন :