প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ধরনের তেল। পছন্দের ডিশে নিজের রুচি অনুযায়ী রাঁধুনিরা সয়াবিন, সরিষা কিংবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করে থাকেন।
ডুবো তেলে ভাজা পাকোড়া, পুরি কিংবা চিকেন ফ্রাইয়ের মতো খাবারে প্রচুর তেল প্রয়োজন হয়। ডুবো তেলে ভাজা মাছেরও কোনো জুড়ি নেই। তবে বেশি তেলে ভাজার আর্থিক চাপও রয়েছে। এ জন্য অনেকেই ভাজাভুজির পর বেঁচে যাওয়া তেল ফেলে না দিয়ে আবার নতুন রান্নায় ব্যবহার করেন।
তবে রান্নার তেলের এই পুনর্ব্যবহার কতটা স্বাস্থ্যসম্মত, তা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, একবার গরম করা তেল দ্বিতীয়বার রান্নায় ব্যবহার করলে প্রচণ্ড স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। এর সত্যতাই বা কতটা, সেটি যাচাই করেছে নিউজবাংলা।
আন্তর্জাতিক কয়েকটি সংবাদমাধ্যম এবং রন্ধন ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, তেল একবার গরম করলেই সেটি দ্বিতীয়বার রান্নার অনুপযোগী হয়ে পড়ে- এমন ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং রান্নার পর বেঁচে যাওয়া তেল কিছু নিয়ম মেনে আবারও ব্যবহার করা যেতে পারে।
বিভিন্ন তেলের রয়েছে বিভিন্ন ‘স্মোক পয়েন্ট’, অর্থাৎ যে তাপমাত্রায় তেলের বাষ্পীভবন শুরু হয়। সরিষার তেলের স্মোক পয়েন্ট হলো ২৫০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। আর মাস্টারক্লাস ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সয়াবিনের স্মোক পয়েন্ট ২৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, পরিশোধিত সূর্যমুখীর তেলের ২২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, পরিশোধিত অলিভ অয়েলের ২৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং ঘির স্মোক পয়েন্ট হলো ২৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্মোক পয়েন্টে পৌঁছালে তেলের গুণাগুণ হারাতে শুরু করে এবং বিষাক্ত হয়ে উঠতে পারে। এ কারণে তেল স্মোক পয়েন্টে পৌঁছানোর আগেই তাতে রান্না করা স্বাস্থ্যসম্মত এবং ওই তেল একাধিবার ব্যবহার করা সম্ভব। যে তেলের স্মোক পয়েন্ট বেশি, সেটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি নিরাপদ বলেও মত দিচ্ছেন তারা।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানকে রান্নার তেল বারবার ব্যবহার করার বেশ কিছু নিয়ম জানিয়েছেন বিখ্যাত কয়েকজন শেফ।
ব্রিটিশ শেফ টম হান্টের পরামর্শ অনুযায়ী, তেলে ভাজাপোড়া রান্না করার অভিজ্ঞতা না থাকলে ওই তেল বারবার ব্যবহার না করাই ভালো।
আপনার মতামত লিখুন :